বেগম জিয়ার আপোষহীন নেত্রী হয়ে ওঠার ইতিহাস:
দৃশ্যপট ১-
১৯৮৬ সাল,বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ,জামায়াত, বামপন্থী দল সহ গণতন্ত্রকামী সকল দল স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে ব্যস্ত।মতিয়া, ইনুরা সারাদিন এরশাদবিরোধী আন্দোলন করে সন্ধ্যা হলেই চলে যেতো রওশনের বাসায়।জনশ্রুতি আছে রাত হলেই রওশনের কাছ থেকে বস্তা বস্তা টাকা নিয়ে আসতেন। আন্দোলন চলাকালীন সময়ে ইনু অসুস্থ হয়ে পড়লে এরশাদ সরকারের টাকায় সিঙ্গাপুর থেকে ট্রিটমেন্ট করিয়ে আনা হয়।ঠিক ওই সময়েই এরশাদ একটা পাতানো নির্বাচনের আয়োজন করে।বেগম জিয়াকে সংসদে বড় অংকের আসন দিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আমন্ত্রন জানায়।একই টোপ দেওয়া হয় বাকী দলগুলোকে।আওয়ামীলীগ,জামায়াত এ টোপকে খুব সহজেই গিলে নেয় কিন্ত খালেদা জিয়া তার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন।এ মঞ্চ থেকেই খালেদা জিয়াকে আপোষহীন উপাধি দেওয়া হয়।এ উপাধি বিএনপির দেওয়া নয়,এ উপাধি জনগনের দেওয়া।
দৃশ্যপট ২-
১/১১ এ মঈনউদ্দিন,ফখরুদ্দিনের শাসনামলে খালেদা জিয়া, তারেক জিয়ার উপর নেমে আসে মিথ্যা মামলা আর নির্যাতনের খড়গ।বেগম জিয়াকে দেশ ছাড়ার অফার দেওয়া হয়। দেশ ছাড়লেই মিথ্যা মামলা,নির্যাতন থেকে মুক্তি পাবে। বেগম জিয়া স্পষ্ট ভাষায় বলে দিলেন,দেশের জন্য তাঁর স্বামীকে হারিয়েছেন।প্রয়োজনে মামলা, নির্যাতন বা সন্তান হারানো সবকিছু মেনে নিতে রাজী আছি কিন্ত দেশ ছাড়তে রাজী নই।এ দেশের প্রতিটা মানুষ আমার সন্তানের মমতো। এরপর স্বজনহীন অবস্থায় দেশে একাই সংগ্রাম করেন।এক ছেলে বিদেশেই মৃত্যুবরন করেন।সত্তোরোর্ধ একজন মহিলা হওয়া সত্বেও মিথ্যা মামলায দীর্ঘদিন কারাগারে থাকেন।আপোষহীনতার এক অনন্য উদাহরন সৃষ্টি করেন।
দৃশ্যপট ৩-
স্বৈরাচারী হাসিনার পাতানো নির্বাচনে আসন ভাগাভাগির অফারে নির্বাচনে আসার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তিনি স্পষ্টভাবে নাকচ করে দেন। ১৮ র নির্বাচনে তিনি জেলে না থাকলে দল কখনোই নির্বাচনে আসতো না। জেলখানায় তাঁর মনোনয়ন পত্র নিয়ে গেলে তিনি মনোনয়নপত্র ছিড়ে ফেলেন এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি তার অনাস্থার কথা সরাসরি জানিয়ে দেন। ( এগুলো প্রমানসাপেক্ষ ইতিহাস নয়।তবে দায়িত্ব নিয়েই বলছি, মিথ্যা প্রমানের সুযোগ নেই)
দৃশ্যপট ৪-
সম্প্রতি তাঁর মিথ্যা মামলাগুলো রাষ্ট্রপতির সাধারন ক্ষমায় খারিজের প্রস্তাব দেওয়া হলে ৭৯ বছর বয়সে কোর্টে হাজিরা দিয়ে মামলায় লড়তে চান কিন্ত তিনি কোনো আপষে রাজি হননি।
জ্বী, এটাই বেগম জিয়ার আপোষহীনতার ইতিহাস,এটাই বিএনপির ইতিহাস। খুব শীঘ্রই ইতিহাসে জায়গা করে নিবে বেগম জিয়ার রাজনৈতিক ইতিহাস।
লেখা: তরিকুল ইসলাম
সাবেক ছাত্রনেতা,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।